Competitive Programming কী এবং ক্যারিয়ারে এর গুরুত্ব কতটা?

Competitive Programming, আচ্ছা আপনে কি কখনো ভেবেছেন, কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিং মানে আবার কী জিনিস? নাম শুনলেই মনে হয় কেউ একজন ল্যাপটপ নিয়ে বসে Olympic-level কোডিং করছে। আসলে ব্যাপারটা তেমন ভয়ংকর না।

what is competitive programming - 2025
what is competitive programming – 2025

সহজ ভাষায়, কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিং মানে হলো:
আপনার মগজ আর ল্যাপটপ মিলে একটা IQ Gym খুলছে। এখানে আপনের কাজ হলো সমস্যার প্যাঁচ খুঁজে বের করা, তারপর কোড দিয়ে সলভ করা।

মানে, একদম ভিডিও গেম খেলছেন তবে কন্ট্রোলার না, হাতে কীবোর্ড।

কেন আপনের Competitive Programming শেখা উচিত?

আপনে ভাবতে পারেন, “এইসব কোডিং কনটেস্ট শিখে লাভ কী?”

ওরে বাবা, লাভের লিস্ট শুনলে অবাক হবেন:

  • আপনের Problem Solving পাওয়ার 10X হয়ে যাবে।
  •  ইন্টারভিউতে যে ভয়ংকর কোডিং প্রশ্ন দেয় ওইটা আপনের কাছে হবে চা-খাওয়ার মতো ইজি
  • Google, Microsoft, Meta-র মতো কোম্পানিগুলা আপনের দিকে তাকাবে অন্য চোখে।
  • আর সবচেয়ে বড় লাভ হলো মগজ শার্প হবে, লজিক ফাটাফাটি হবে।

আপনে কীভাবে শুরু করবেন?

অনেকেই ভাবে, Competitive Programming শুরু করতে হলে হয়তো ম্যাথ-এ মাস্টার্স বা কম্পিউটার সায়েন্সে পিএইচডি থাকতে হবে।
কিন্তু সত্যিটা হলো এই জিনিস শিখতে আপনার দরকার শুধু একটা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ আর শেখার ইচ্ছা

প্রথমে ঠিক করেন, কোন ল্যাঙ্গুয়েজে শুরু করবেন।
সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় C++, Java, আর Python

এখন প্রশ্ন আসবে “ভাই, কোনটা নেব?”
আমার ফ্রি সাজেশন – C++ নেন।

কারণ এতে আছে STL (Standard Template Library), যেটা হলো কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিংয়ের জন্য আলটিমেট শর্টকাট।

চিন্তা করেন, আপনাকে যদি নিজের হাতে সব অ্যালগরিদম বানাতে হতো, তবে অনেক সময় লেগে যেত। STL থাকায়, ready-made data structure আর algorithm পাওয়া যায়।

এরপরে আসলো Data Structure & Algorithm:

এই অংশটাই আসল খেলা। এটাকে যদি না শেখেন, তাহলে আপনার প্রোগ্রামিং স্কিল গেমে লেভেল-১ এ আটকে যাবে।
কিন্তু এগুলো একে একে শিখতে শুরু করলে আপনে একেকটা Boss Level Unlock করতে পারবেন।

বেসিক Data Structure:

  • Array, String, Stack, Queue
    এসব হলো গেমের শুরুতে Basic Weapon তলোয়ার বা ঢাল টাইপের জিনিস।

ইন্টারমিডিয়েট লেভেল:

  • Binary Search, Sorting Algorithm (Quick Sort, Merge Sort)
    এইগুলো শিখলে আপনে Fast Weapon পেয়ে যাবেন মানে সমস্যা সলভ হবে আগের থেকে 10 গুণ দ্রুত।

অ্যাডভান্সড লেভেল:

  • Dynamic Programming (DP) – এটা শিখলে আপনি গেমের আসল বসদের সঙ্গে লড়াই করতে পারবেন।
  • Graph Algorithm (DFS, BFS, Dijkstra) – এটাকে বলা যায় পুরো প্রোগ্রামিং গেমের ম্যাপ। এখানে পথ হারালে গেমে হেরে যাবেন।

মানে, ধাপে ধাপে এগুলো শেখার সাথে সাথে আপনি একেকটা Power Upgrade করবেন।
শুরুতে Array শিখে ছোট খাটো সমস্যা সলভ করবেন, এরপর Sorting দিয়ে একটু স্পিড বাড়াবেন।
DP শেখার পর মনে হবে, “বাহ! আমি তো এখন সত্যিকারের প্রোগ্রামার!”
আর Graph এ ঢুকলেই বুঝবেন, আসল যুদ্ধ শুরু হলো।

তাই একদম চিন্তা করবেন না। ধীরে ধীরে এই টপিকগুলো শেষ করলেই আপনার কাছে প্রোগ্রামিং হবে একদম মজার গেমপ্লে। 

কোথায় প্র্যাকটিস করবেন?

এখন প্রশ্ন আসলো “আচ্ছা ভাই, শিখলাম তো অনেক কিছু, কিন্তু এইসব জিনিস প্র্যাকটিস করবো কোথায়?”

চিন্তা নাই! ইন্টারনেটে এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলো একেকটা অনলাইন খেলার মাঠ যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ মাথা ঘামাচ্ছে, সমস্যার সমাধান করছে, কনটেস্ট খেলছে, আর নিজেদের স্কিল লেভেল বাড়াচ্ছে।

এবার চলেন একে একে দেখে নেই:

Complete web development with Programming Hero

-৪৩০০+ জব প্লেসমেন্ট
– ৩ বেলা ডেডিকেটেড লাইভ সাপোর্ট
-১০০% জব প্লেসমেন্ট সাপোর্ট
-৮৫ টি মডিউল, ১২+ মাইলস্টোন
-ডেডিকেটেড হেল্প ডেস্ক ২৪/৭

Codeforces – গেম-লেভেল চ্যালেঞ্জিং

Codeforces হলো কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিংয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় Battleground
এখানে আপনি পাবেন:

  • রেগুলার কনটেস্ট (প্রতিদিনের মতোই মনে হয়)
  • Easy – Hard লেভেলের অসংখ্য সমস্যা
  • একটা বিশাল কমিউনিটি (যেখানে আপনি অন্যদের কোড আর Editorial দেখে শিখতে পারবেন)

নতুন হলে প্রথমদিকে সমস্যা গুলো দেখে মাথা গরম লাগবে, কিন্তু ধীরে ধীরে আপনে দেখবেন প্রতিটা কনটেস্ট হলো একেকটা ভিডিও গেম ম্যাচের মতো।

LeetCode – ইন্টারভিউর জন্য সেরা

LeetCode হলো তাদের জন্য যারা চাকরির ইন্টারভিউর জন্য কোডিং প্র্যাকটিস করতে চান।
এখানে:

  • কোম্পানি-স্পেসিফিক প্রশ্ন আছে (Google, Microsoft, Amazon ইত্যাদি)
  • Easy/Medium/Hard ট্যাগ করা সমস্যা থাকে
  • সুন্দর UI আছে, তাই কাজ করতে বিরক্ত লাগবে না

আপনে যদি ভবিষ্যতে বড় কোম্পানিতে ঢুকতে চান, তাহলে LeetCode হবে আপনার ইন্টারভিউর ট্রেনিং গ্রাউন্ড

AtCoder – Beginner-friendly 

AtCoder জাপানি একটি প্ল্যাটফর্ম, তবে চিন্তা করবেন না সবকিছুই ইংরেজিতে পাওয়া যায়।
এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো:

  • খুব Beginner-friendly contest থাকে
  • সমস্যা গুলো পরিষ্কার ও সহজভাবে লেখা হয়
  • একেকটা প্রবলেম সমাধান করলে মনে হবে, আপনি আস্তে আস্তে নতুন লেভেল আনলক করছেন

তাই একেবারে নতুন হলে, AtCoder এ কনটেস্ট দিয়ে আত্মবিশ্বাস বাড়াতে পারবেন।

HackerRank – সুন্দর UI + ছোট ছোট প্রবলেম

HackerRank হলো শুরুর দিকের শিক্ষার্থীদের জন্য স্বর্গ
এখানে:

  • Language-specific চ্যালেঞ্জ আছে (মানে Java শিখলে Java দিয়েই অনুশীলন করতে পারবেন)
  • Problem গুলো ছোট ছোট তাই দ্রুত সলভ করতে পারবেন
  • Badge আর Achievement পাওয়া যায় (মানে গেম খেললে যেমন Medal মেলে, তেমনই!)

তাই একেবারে Beginner হলে HackerRank দিয়ে শুরু করলে মনে হবে, “আহা! আমি তো পারি।”

তাহলে নতুনরা কোথা থেকে শুরু করবেন?

আমার সাজেশন হলো:

  • যদি একেবারে নতুন হন – HackerRank দিয়ে শুরু করুন।
  • একটু আত্মবিশ্বাস এলে – AtCoder এ যান।
  • মাঝারি লেভেলে গেলে – Codeforces এ ঝাঁপ দেন।
  • ইন্টারভিউ প্রিপারেশন চাইলে – LeetCode আপনার সেরা বন্ধু।

মানে হলো প্র্যাকটিস প্ল্যাটফর্ম বেছে নেওয়ার দরকার নেই, বরং ধাপে ধাপে এদের সবার সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলবেন।
কারণ প্রতিটা প্ল্যাটফর্ম আপনাকে আলাদা আলাদা স্কিল শিখাবে।

মনে রাখবেন, “প্র্যাকটিস ছাড়া কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিং-এ উন্নতি সম্ভব না।”

আপনের জন্য রোডম্যাপ:

Competitive Programming শেখা অনেকটা গেম খেলার মতো। প্রথমে Tutorial Level, তারপর আস্তে আস্তে Boss Fight।
তাই এখানে একটা সিম্পল কিন্তু কাজে লাগার মতো রোডম্যাপ দিলাম যেটা ফলো করলে আপনি Beginner থেকে Pro হয়ে যাবেন।

Step 1: একটা ল্যাঙ্গুয়েজ সলিড করেন

প্রথম কাজ হলো একটা Programming Language বেছে নেয়া (C++, Java, Python যেকোনো একটা)।
কিন্তু যেটাই নেন, সেটাকে ভালো করে আয়ত্ত করুন।
যেমন: Input-Output, Loop, Function, Array, String এসব যেন চোখ বন্ধ করে লিখতে পারেন।

Step 2: প্রতিদিন অন্তত ১-২টা প্রবলেম সলভ করেন

এটা হলো Daily Workout। যেমন শরীরের জন্য এক্সারসাইজ দরকার, তেমনি মগজের জন্য Problem Solving দরকার।
প্রতিদিন ছোট ছোট প্রবলেম সলভ করলে ধীরে ধীরে Confidence বাড়বে।

Step 3: সপ্তাহে একবার কনটেস্ট দিন

যেমন ভিডিও গেম খেললে লেভেল পাস করে নতুন excitement আসে, ঠিক তেমনি Contest হলো আপনের Progress Check করার সেরা জায়গা।
প্রথম কনটেস্টে হয়তো শূন্য পয়েন্টও পাবেন (চিন্তা নাই, সবাই প্রথমে এমনই থাকে)।
কিন্তু নিয়মিত কনটেস্ট দিলে দেখবেন, সময়ের সাথে সাথে আপনি উন্নতি করছেন।

Step 4: এক মাস পর থেকে হেভিওয়েট টপিক শিখুন

প্রথম ১ মাস Basic Problem এ ফোকাস করুন।
তারপর আস্তে আস্তে ঢুকে পড়ুন Graph, Dynamic Programming (DP) এর মতো “Heavyweight Topic”-এ।
এগুলা দেখতে ভয়ানক লাগে, কিন্তু একবার বুঝে গেলে মজা পাবেন।

Step 5: Editorial পড়ে অন্যদের কোডিং স্টাইল শিখুন

অনেক সময় দেখা যাবে, আপনি চেষ্টা করলেন কিন্তু Problem Solve করতে পারলেন না।
তখন হাল ছেড়ে দেবেন না।
Editorial পড়ুন, অন্যদের কোড দেখুন, বুঝুন – তারা কীভাবে Approach করেছে।
এভাবে শিখলে আপনার নিজের Problem Solving Skill অনেক দ্রুত Improve হবে।

সংক্ষেপে বললে:

  • Language Strong করুন
  • প্রতিদিন Problem Solve করুন
  • Contest খেলুন
  • Heavy Topic শিখুন
  • অন্যদের কোড থেকে শিখুন

এটাই হলো একদম Simple কিন্তু Powerful Roadmap!

Competitive Programming হলো অনেকটা দীর্ঘ দৌড়ের মতো। শুরুতে হোঁচট খাবেন, মাথা গরম হবে, হয়তো অনেক সময় কিছুই বুঝবেন না।
কিন্তু মনে রাখেন প্রতিদিন ছোট ছোট স্টেপ নিলেই একদিন বড় জাম্প দিতে পারবেন।

আপনি যদি প্রতিদিন ১-২টা প্রবলেম সলভ করেন, কনটেস্টে অংশ নেন, আর নতুন নতুন টপিক শিখতে থাকেন তাহলে খুব শিগগিরই দেখবেন,
“অরে! আমি তো আসলেই অনেক কিছু পারি!”

কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিং শুধু কোডিং না, এটা আপনাকে ধৈর্য, সমস্যা সমাধান আর টাইম ম্যানেজমেন্ট শিখাবে।
এই স্কিল গুলো চাকরি, ক্যারিয়ার, এমনকি আপনার লাইফের অন্য সবখানেই কাজে আসবে।

তাই আজকেই শুরু করেন। HackerRank/Codeforces এ একটা একাউন্ট খুলে বসে যান।
প্রথম দিনে ব্যর্থ হলে দুঃখ নাই, কারণ প্রতিটি Wrong Answer আপনাকে নিয়ে যাচ্ছে এক ধাপ এগিয়ে

মনে রাখবেন আপনি পারবেন! 

Technology এর সকল আপডেট সবার আগে বিস্তারিত পেতে চেক করুন

Scroll to Top