কোডিং আর আলসেমি: কোন পথে এগোবেন?

কোডিং এ আমি, তুমি, আর আলসেমির মধ্যে একটা লড়াই

কোডিং আর আলসেমি এই দুটো যেন আমাদের জীবনের সেই বন্ধু আর শত্রু জুটি। একজন বলে, “চল, কিছু বানাই!” আরেকজন ফিসফিস করে, “আরেকটু পরে, ইউটিউবে একটা ভিডিও দেখে নিই।” আমার নিজের কথাই বলি গত সপ্তাহে একটা ছোট প্রজেক্ট শুরু করার কথা ভাবলাম। ল্যাপটপ খুললাম, চা বানালাম, আর তারপর? হঠাৎ দেখি, আমি “বিড়ালের মজার ভিডিও” দেখতে দেখতে ঘণ্টাখানেক কাটিয়ে দিয়েছি! হাসতে হাসতে নিজের উপরই রাগ হয়। এটা কি তোমার সঙ্গেও হয়? বাজি ধরে বলতে পারি, হ্যাঁ!

কোডিং আর আলসেমি: কোন পথে এগোবেন?

কোডিং শেখা বা কাজ করার সময় আলসেমি এসে পা জড়িয়ে ধরে। কিন্তু এটাকে জয় না করলে আমাদের সেই দারুণ অ্যাপ বানানোর স্বপ্ন, বা বসকে ইমপ্রেস করার প্ল্যান সব পিছিয়ে পড়ে। তাই আজ আমরা একসঙ্গে এই আলসেমির সঙ্গে লড়তে শিখব। চা-কফি নিয়ে বসো, এই যাত্রাটা হবে মজার আর কাজের!

 আলসেমির সঙ্গে কোডিংয়ের লড়াই

প্রোক্রাস্টিনেশন: এটা কোথা থেকে আসে, আর কী করে?

প্রোক্রাস্টিনেশন মানে কাজ পিছিয়ে দেওয়া। আর কোডিংয়ের ক্ষেত্রে এটা যেন আমাদের পিছু ছাড়ে না। কতবার হয়েছে, একটা বাগ ফিক্স করতে বসে ভাবি, “আরেকটু পরে করব।” আমার এক বন্ধু, রাহুল, একবার বলেছিল সে একটা টাস্ক ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ বানাবে। কিন্তু শুরু করার আগেই টিউটোরিয়াল দেখতে গিয়ে দিন শেষ! আমি তাকে বলেছিলাম, “ভাই, তুই তো টিউটোরিয়াল দেখার প্রো হয়ে গেলি, এবার কোড লেখ!” সে হেসে বলল, “আরেকটু রিসার্চ বাকি।” তুমি কি এমন করো?

এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে আমি একটা বই পড়েছিলাম ‘Eat That Frog!’। লেখক Brian Tracy বলেন, দিনের সবচেয়ে কঠিন কাজটা আগে করো। মানে, সেই বিরক্তিকর বাগ ফিক্স বা নতুন ফিচারটা আগে শেষ করো, বাকিগুলো তখন পার্কে হাঁটার মতো লাগবে। আরেকটা দারুণ বই, ‘Deep Work’ by Cal Newport। এখানে Newport বলেন, গভীর মনোযোগ দিয়ে কাজ করলে আলসেমি পালায়। আমি একবার ফোন বন্ধ করে, দরজা লক করে বসেছিলাম দুই ঘণ্টায় একটা ফিচার শেষ! তুমি কি এটা ট্রাই করেছ?

মিনি চ্যালেঞ্জ: আজ রাতে ১০ মিনিট ফোন বন্ধ করে কোড লেখো। কেমন লাগল, আমাকে বলো!

আলসেমির কুফল: কোডে কী হয়, আর জীবনে কী হয়

আলসেমি করলে কোড হয়ে যায় জঙ্গলের মতো বাগের ঝোপ আর এররের লতাপাতা। আমার একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। গত মাসে একটা প্রজেক্টের ডেডলাইন ছিল। আমি ভেবেছিলাম, “আরেকটু পরে করব।” শেষ মুহূর্তে তাড়াহুড়ো করে একটা ফাংশন লিখলাম। পরে দেখি, সেটা ক্র্যাশ করছে! টেস্ট করার সময় ছিল না, কারণ আগে ইনস্টাগ্রামে রিল দেখে সময় নষ্ট করেছি। ফল? বসের কাছে বকা, আর নিজের উপর রাগ। তোমার সঙ্গে এমন হয়েছে?

‘The Pragmatic Programmer’ বইতে Andrew Hunt আর David Thomas বলেন, কোড লেখার সময় মনোযোগ আর প্ল্যান না থাকলে ভুল হয়। আর ‘Atomic Habits’ বইতে James Clear বলেন, ছোট অভ্যাস গড়লে এই সমস্যা কমে। উদাহরণ দিই প্রতিদিন ১০ মিনিট কোড লেখার অভ্যাস করো। আমি এটা শুরু করেছিলাম, আর এক মাসে একটা ছোট গেম বানিয়ে ফেলেছি! আলসেমির কারণে কোডে ভুল হলে প্রজেক্ট দেরি হয়, ক্লায়েন্ট রেগে যায়, আর আমাদের স্বপ্নের পিছনে ধুলো জমে। তাই এটাকে ঠেকাতে হবে।

কল্পনা করো: তুমি একটা দারুণ অ্যাপ বানালে, আর লোকে বলছে, “ওয়াও, এটা তুমি বানিয়েছ?”এটা কি চাও না?

সময় ব্যবস্থাপনা: কোডারদের সুপারপাওয়ার

ডেভেলপার হিসেবে সময় ম্যানেজ করা না শিখলে আলসেমি জিতে যায়। আমি পোমোডোরো টেকনিক ব্যবহার করি ২৫ মিনিট কাজ, ৫ মিনিট বিরতি। একবার একটা ফিচার লিখতে বসেছিলাম। দুটো পোমোডোরো সেশনেই শেষ! মনে হলো, “আমি কি সুপারহিরো হয়ে গেলাম?” তুমি কি এটা ট্রাই করেছ?

‘Deep Work’ বইতে Cal Newport বলেন, ফোকাস করলে প্রোডাক্টিভিটি আকাশ ছোঁয়। আর ‘The 5 AM Club’ বইতে Robin Sharma বলেন, সকালে উঠে কাজ শুরু করো। আমি একবার সকাল ৫টায় উঠে কোডিং শুরু করেছিলাম দিনটা যেন সোনায় মোড়া ছিল। তুমি কখন কোড লেখো? সকাল না রাত?

টিপস: একটা টাইমার সেট করো। ২৫ মিনিট কোড লেখো, ৫ মিনিটে একটা মজার ভিডিও দেখো। দেখবে, কাজও হবে, মজাও থাকবে।

Complete web development with Programming Hero

-৪৩০০+ জব প্লেসমেন্ট
– ৩ বেলা ডেডিকেটেড লাইভ সাপোর্ট
-১০০% জব প্লেসমেন্ট সাপোর্ট
-৮৫ টি মডিউল, ১২+ মাইলস্টোন
-ডেডিকেটেড হেল্প ডেস্ক ২৪/৭

বইয়ের জাদু: আলসেমি তাড়ানোর গাইড

বই পড়লে আলসেমির বিরুদ্ধে অস্ত্র পাওয়া যায়। আমার ফেভারিট? ‘Atomic Habits’ by James Clear। এখানে Clear বলেন, ছোট অভ্যাস বড় জয় এনে দেয়। আমি প্রতিদিন ১০ মিনিট কোডিং শুরু করেছিলাম এক মাসে একটা টুল বানিয়ে ফেলেছি! আর ‘Deep Work’ বইতে Newport ফোকাসের কৌশল শেখান। ফোন বন্ধ করে কাজ করলে কী শান্তি, তুমি জানো?

এছাড়া, ‘The Power of Habit’ by Charles Duhigg পড়ে বুঝেছি, আলসেমি একটা অভ্যাস আর এটাকে ভাঙা যায়। আরেকটা বই, ‘The War of Art’ by Steven Pressfield, বলে আলসেমি একটা শত্রু। আমি এটা পড়ে ভাবলাম, “ঠিক আছে, এবার লড়াই!” তুমি কোন বই পড়েছ যেটা তোমাকে হেল্প করেছে?

চ্যালেঞ্জ: একটা বই পড়া শুরু করো। ১০ পেজ পড়ে দেখো, কী আইডিয়া পাও।

 তুমি পারবে, আমি জানি!

আলসেমি আমাদের সবার মধ্যে আছে, কিন্তু এটা আমাদের বস নয়। সঠিক কৌশল আর একটু চেষ্টায় আমরা কোডিংয়ে রাজা হতে পারি। আমি তোমাদের জন্য একটা মজার চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি আজ থেকে প্রতিদিন ১০ মিনিট কোডিং করো। একটা ছোট প্রজেক্ট শুরু করো হয়তো একটা ক্যালকুলেটর বা টু-ডু লিস্ট। পোমোডোরো টেকনিক ট্রাই করো। আর একটা ডায়েরি রাখো প্রতিদিন লেখো, “আজ আমি এটা শিখলাম!”

এক সপ্তাহ পরে দেখবে, আলসেমি পালিয়েছে, আর কোডিংয়ে মজা বেড়েছে। তুমি কোন পথে যাবে আলসেমির অন্ধকার না কোডিংয়ের আলো? আমি জানি, তুমি আলো বেছে নেবে। শুরু করো, আর আমাকে বলো, “আমি পারলাম!”

Recommended Books (আরেকটু মশলা দিয়ে!)

  1. ‘Deep Work’ by Cal Newport
    ফোকাসের সুপারপাওয়ার শেখায়। আমি ফোন বন্ধ করে কোড লিখে দেখেছি মনে হয় সুপারম্যান!
  2. ‘Atomic Habits’ by James Clear
    ছোট অভ্যাসের জাদু। ১০ মিনিট কোডিং করে দেখো, এক মাসে কী হয়!
  3. ‘The Pragmatic Programmer’ by Andrew Hunt and David Thomas
    কোডে ভুল কমানোর গাইড। আলসেমি ঠেকাতে এটা তোমার বন্ধু।
  4. ‘The Power of Habit’ by Charles Duhigg
    আলসেমির বিজ্ঞান বোঝায়। পড়লে মনে হবে, “আমি এটাকে হারাতে পারি!”

শেষ চ্যালেঞ্জ: আজ থেকে শুরু করো! ১০ মিনিট কোডিং, এক সপ্তাহ পরে আমাকে বলো, “ভাই, আমার জীবন বদলে গেছে!” আমি অপেক্ষায় আছি, হাসি মুখে! 

Technology এর সকল আপডেট সবার আগে বিস্তারিত পেতে চেক করুন

Scroll to Top